শতফুল বাংলাদেশ

সমাজ উন্নয়নে একটি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ পথচলা

প্রতিষ্ঠান পরিচিতি

শতফুল বাংলাদেশ একটি অলাভজনক বেসরকারি সংস্থা, যা ২০০০ সালে রাজশাহী জেলার মোহনপুর থানার জাহানাবাদ ইউনিয়নে প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি মূলত একটি এনজিও প্রতিষ্ঠান, যার প্রধান লক্ষ্য ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচির মাধ্যমে সমাজের দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জীবনমান উন্নয়ন। এছাড়াও, শতফুল বাংলাদেশ কৃষি, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা বিস্তার, সামাজিক উন্নয়ন, দক্ষতা উন্নয়ন, উদ্যোক্তা তৈরি এবং বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে। এই প্রতিষ্ঠানটি সমাজের প্রান্তিক মানুষের কল্যাণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে, যাতে তারা স্বাবলম্বী এবং সমৃদ্ধ জীবন যাপন করতে পারে।

 

আমাদের লক্ষ্য

শতফুল বাংলাদেশের লক্ষ্য একটি অরাজনৈতিক, সর্বজনীন, অলাভজনক, আর্থ-সামাজিক এবং জনহিতকর স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা হিসেবে কাজ করা। এই সংস্থা সমস্ত ধর্ম ও বর্ণের মানুষকে, বিশেষ করে দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে, স্বাবলম্বী করে তুলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের মূল উদ্দেশ্য হলো প্রত্যেকের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করা, যাতে তারা নিজেদের সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে সমাজে অবদান রাখতে পারে।

 

আমাদের দর্শন

শতফুল বাংলাদেশ টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নের মাধ্যমে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা, লিঙ্গ সমতা নিশ্চিতকরণ, সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এবং দরিদ্র-বান্ধব ক্ষুদ্রঋণ সেবার মাধ্যমে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বিশ্বাসী। আমরা সমাজের সকল স্তরের মানুষের সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে একটি ন্যায়সঙ্গত ও সমৃদ্ধ সমাজ গড়ে তুলতে চাই।

 

মূলনীতি

শতফুল বাংলাদেশ তার কার্যক্রম পরিচালনায় নিম্নলিখিত মূলনীতিগুলো মেনে চলে:

  • সততা এবং ন্যায়বিচার: সকল কার্যক্রমে সততা ও ন্যায়বিচার বজায় রাখা।

  • গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা: স্বচ্ছ ও গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে কাজ করা।

  • শান্তি ও সমৃদ্ধি: সমাজে শান্তি ও সমৃদ্ধি প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখা।

  • নারীদের প্রতি সম্মান: নারীদের ক্ষমতায়ন ও সম্মান নিশ্চিত করা।

  • অন্তর্ভুক্তি এবং মর্যাদা: সকলের জন্য সমান সুযোগ ও মর্যাদ 

  • অন্তর্ভুক্তি এবং মর্যাদা: সকলের জন্য সমান সুযোগ ও মর্যাদা নিশ্চিত করা।

  • উদ্ভাবন এবং গুণগতমান: কার্যক্রমে উদ্ভাবন ও গুণগত মান বজায় রাখা।

  • মানব সম্পদে বিশ্বাস: মানুষের সম্ভাবনায় বিশ্বাস এবং তার বিকাশে অবদান।

  • প পারস্পরিক শ্রদ্ধাশীলতা: সকলের প্রতি শ্রদ্ধাশীল মনোভাব।

  • ঐক্য: সমাজের সকল স্তরের মানুষের মধ্যে ঐক্য সৃষ্টি।

  • ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য নিরাপদ মাতৃভূমি: পরিবেশগতভাবে টেকসই ও নিরাপদ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা।

 

মৌলিক দর্শন

শতফুল বাংলাদেশ বিশ্বাস করে, মানুষের সম্ভাবনা অসীম। আমাদের লক্ষ্য এই সম্ভাবনাকে বহুমাত্রিকভাবে প্রকাশ করার সুযোগ সৃষ্টি করা এবং মানব কল্যাণের জন্য তা কাজে লাগানো। আমরা প্রত্যেক মানুষের মধ্যে নিহিত সম্ভাবনাকে চিহ্নিত করে তাদের জীবনকে আরও উন্নত করতে সচেষ্ট।

 

বিস্তৃত উদ্দেশ্য

শতফুল বাংলাদেশের বিস্তৃত উদ্দেশ্য হলো শোষণ, নিপীড়ন, অবিচার, বৈষম্য ও দারিদ্র্যমুক্ত একটি পরিবেশগতভাবে সুস্থ সমাজ গড়ে তোলা। আমরা এমন একটি সমাজ বিনির্মাণে কাজ করছি যেখানে প্রত্যেকে সমান সুযোগ ও মর্যাদা পাবে। আমাদের বিশেষ লক্ষ্যগুলো হলো:

  • নারীর ক্ষমতায়ন: নারীদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষমতায়নে বিশেষ সহায়তা প্রদান।

  • শিশুদের শিক্ষা: সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি।

  • স্বাস্থ্য ও পুষ্টি: দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য স্বাস্থ্য ও পুষ্টির উন্নয়ন।

  • চিকিৎসা সেবা: অসহায় ও দরিদ্রদের জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা।

  • জল ও পয়নিষ্কাশন: নিরাপদ পানি ও পয়নিষ্কাশন ব্যবস্থা প্রদান এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সহায়তা।

 

কার্যক্রমের প্রভাব

শতফুল বাংলাদেশ গত দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। আমাদের ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি হাজার হাজার পরিবারকে স্বাবলম্বী হতে সাহায্য করেছে। কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষকরা উন্নত কৃষি পদ্ধতি শিখেছে এবং তাদের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পেয়েছে। স্বাস্থ্যসেবা কর্মসূচির মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী নিয়মিত চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে। শিক্ষা কর্মসূচির মাধ্যমে শিশু ও যুবকরা নতুন দক্ষতা অর্জন করছে, যা তাদের ভবিষ্যৎ জীবন গঠনে সহায়ক।

 

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

শতফুল বাংলাদেশ ভবিষ্যতে তার কার্যক্রম আরও সম্প্রসারণের পরিকল্পনা করছে। আমরা আরও বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছাতে চাই, বিশেষ করে যারা সমাজের সবচেয়ে প্রান্তিক অবস্থানে রয়েছে। আমাদের পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার, আরও উদ্ভাবনী প্রকল্প চালু করা এবং স্থানীয় সম্প্রদায়ের সাথে আরও গভীরভাবে কাজ করা। আমরা বিশ্বাস করি, টেকসই উন্নয়ন এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের মাধ্যমে আমরা একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারব।

উপসংহার

শতফুল বাংলাদেশ শুধু একটি সংস্থা নয়, এটি একটি আন্দোলন, যা মানুষের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার জন্য নিবেদিত। আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি, লক্ষ্য এবং মূলনীতির প্রতি অবিচল প্রতিশ্রুতি নিয়ে আমরা এমন একটি সমাজ গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছি, যেখানে প্রতিটি মানুষ মর্যাদা, সমতা এবং সমৃদ্ধির সুযোগ পাবে। আমাদের এই যাত্রায় আমরা প্রতিটি ব্যক্তি ও সম্প্রদায়কে ক্ষমতায়নের মাধ্যমে একটি শোষণমুক্ত, ন্যায়সঙ্গত ও টেকসই ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আসুন, আমরা একসঙ্গে এই পথচলায় অংশ নিয়ে সমাজে স্থায়ী পরিবর্তন আনয়ন করি, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি উন্নত ও নিরাপদ মাতৃভূমি নিশ্চিত করা যায়।