
সমৃদ্ধি কর্মসূচী
“দারিদ্র দূরীকরণের লক্ষ্যে দরিদ্র পরিবারসমূহের সম্পদ ও সক্ষমতা বৃদ্ধি (সমৃদ্ধি) কর্মসূচি”
- সমৃদ্ধি গণিপুর ইউনিয়নে পরিচালিত স্যাটেলাইট ক্লিনিকের মাধ্যমে স্বাস্থ্য ক্যাম্প
- সমৃদ্ধি গণিপুর ইউনিয়নের সমৃদ্ধি কর্মসূচীর আওতায় প্রবীনদের চোখের ছানি অপারেশন
- জাহানাবাদ ইউনিয়নে সমৃদ্ধি কর্মসূচীর আওতায় স্বাস্থ্য সেবিকাদের ব্যাগ ও ছাতা বিতরণ
- জাহানাবাদ ইউনিয়নে সমৃদ্ধি কর্মসূচীর আওতায় স্বাস্থ্য সেবিকাদের ব্যাগ ও ছাতা বিতরণ
- বানেশ্বর ইউনিয়নে সমৃদ্ধি কর্মসূচীর আওতায় স্বাস্থ্য সেবিকাদের ব্যাগ ও ছাতা বিতরণ
- বানেশ্বর ইউনিয়নে সমৃদ্ধি কর্মসূচীর যুব ওয়ার্ড সমন্বয় সভা
- বানেশ্বর ইউনিয়নে সমৃদ্ধি কর্মসূচীর আওতায় স্বাস্থ্য সেবায় পরিচালিত স্যাটেলাইট ক্লিনিক
- বানেশ্বর ইউনিয়নে সমৃদ্ধি কর্মসূচীর আওতায় যুব দিবস পালন
- বানেশ্বর ইউনিয়নের সমৃদ্ধি কর্মসূচীর আওতায় যুব সমাজের আত্ম-উপলদ্ধি, নেতৃত্ববিকাশ ও করণীয় শীর্ষক প্রশিক্ষণ
- বানেশ্বর ইউনিয়নের সমৃদ্ধি কর্মসূচীর আওতায় স্যানিটারি ল্যাট্রিন নির্মানের উপকরণ সরবরাহ
- বানেশ্বর ইউনিয়নের সমৃদ্ধি কর্মসূচীর আওতায় যুবদের খেলাধুলা
- বানেশ্বর ইউনিয়নের সমৃদ্ধি কর্মসূচীর আওতায় নৃত্য প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণকৃত নৃত্যরত শিশু
- বানেশ্বর ইউনিয়নের সমৃদ্ধি কর্মসূচীর আওতায় শিক্ষা সহায়তা কেন্দ্রে অধ্যয়ণরত শিক্ষার্থী
- বানেশ্বর ইউনিয়নের সমৃদ্ধি কর্মসূচীর আওতায় খেলাধুলা প্রতিযোগীতা

মো: মামুন অর রশিদ
সহকারী পরিচালক (প্রশিক্ষণ ও প্রকাশনা), ফোকাল পার্সন, সমৃদ্ধি কর্মসূচী।
প্রতিষ্ঠান ও সমৃদ্ধি কর্মসূচি পরিচিতি
শতফুল বাংলাদেশ ২০০০ সালে রাজশাহী জেলার মোহনপুর উপজেলার জাহানাবাদ ইউনিয়নে প্রতিষ্ঠিত একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান যা সমাজের দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জীবনমান উন্নয়নে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। পল্লী কর্ম্-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) দেশের দারিদ্র বিমোচনে আয়বৃদ্ধিমূলক কার্যক্রম সহ বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়নে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৪ সাল থেকে পিকেএসএফ-এর সহায়তায় শতফুল বাংলাদেশ “সমৃদ্ধি” নামক একটি দীর্ঘমেয়াদী কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে, যার মূল লক্ষ্য মানব মর্যাদা প্রতিষ্ঠা, আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং দারিদ্র্য হ্রাস। এই কর্মসূচি ১ম পর্যায় রাজশাহী জেলার বাগমারা উপজেলার গণিপুর ইউনিয়ন, মোহনপুর উপজেলার জাহানাবাদ ইউনিয়ন এবং পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর ইউনিয়নে পরিচালিত হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় বতর্মানে পূনর্বিন্যাসকৃত সমৃদ্ধি কর্মসূচি মোহনপুর উপজেলার ঘাসিগ্রাম ইউনিয়নে এবং পুঠিয়া উপজেলার বেলপুকুরিয়া ইউনিয়নে শিক্ষা সহায়তা কার্যক্রম, স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম, উন্নয়নে যুব সমাজ কার্যক্রম, কৈশোর কার্যক্রম, প্রবীণ জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন কার্যক্রম এবং ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক Kvh©µg এবং উপজেলার পৈারসভা ও সকল ইউনিয়নে কৈশোর কার্যক্রম বাস্তবায়িত হচ্ছে। তাছাড়া গোদাগাড়ী ও বাগমারা উপজেলায় সমৃদ্ধি কর্মসূচির কৈশোর কার্যক্রম বাস্তবায়িত হচ্ছে।
সমৃদ্ধি কর্মসূচির মাধ্যমে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি, কৃষি উন্নয়ন, আর্থিক সহায়তা, যুব ও কিশোর-কিশোরীদের উন্নয়ন, ভিক্ষুক পুনর্বাসন, কমিউনিটি-ভিত্তিক উন্নয়ন, এবং দিবস ও উৎসব পালনের মতো বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়িত হচ্ছে। এই কর্মসূচির মাধ্যমে দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে ক্ষমতায়িত করা হচ্ছে যাতে তারা টেকসইভাবে দারিদ্র্য থেকে মুক্তি পেতে পারে।
সমৃদ্ধি কর্মসূচির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
সমৃদ্ধি কর্মসূচির প্রধান লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো:
- মানব সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং তিনটি প্লাটফর্ম্ গঠনের মাধ্যমে (কৈশোর কার্য্ক্রম, উন্নয়নে যুব সমাজ কার্য্ক্রম ও প্রবীণ জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন কার্য্ক্রম) সমৃদ্ধি কর্মসূচির কার্য্ক্রমসমূহ সুবিন্যস্ত ও টেকসইভাবে পরিচালনা করা,
- তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা কার্য্ক্রম, শিক্ষা সহায়তা কার্য্ক্রম, কৈশোর কার্য্ক্রম উন্নয়নে যুব সমাজ কার্য্ক্রম ও প্রবীণ জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন কার্য্ক্রম এবং ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কার্য্ক্রমের আওতায় কর্ম্কান্ড পরিচালনায় স্বেচ্ছাসেবা ও জনসেবামূলক উদ্যোগসমূহকে অনুপ্রাণিত ও উৎসাহিত করা,
- সেচ্ছাসেবী ক্লাব গঠণের মাধ্যমে কর্মসূচির সদস্যদেরকে তিনটি প্লাটফর্ম্ এর (কৈশোর, উন্নয়নে যুব সমাজ ও প্রবীণ জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন) আওতায় অন্তর্ভূ্ক্ত করা এবং তাদেরকে ক্ষমতায়িত করা,
- স্থানীয় প্রশাসন ও বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে উন্নয়নের লক্ষ্যে জনগণকে সম্পৃক্ত করা এবং সহায়ক পরিবেশ গড়ে তোলা
সমৃদ্ধি কর্মসূচির কার্যক্রমসমূহ
শিক্ষা সহায়তা কার্যক্রম
শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড। সমৃদ্ধি কর্মসূচির আওতায় গ্রামীণ দরিদ্র শিশুদের আধুনিক ও মানসম্মত শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করতে শিক্ষা সহায়তা কেন্দ্র পরিচালিত হচ্ছে। এই কেন্দ্রগুলোতে শিশু, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় সহায়তা প্রদান করা হয়। এছাড়া ঝরেপড়া রোধ, দেশপ্রেম, সৃজনশীলতা, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য ও পুষ্টি শিক্ষার মাধ্যমে শিশুদের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করা হচ্ছে। মোহনপুর উপজেলার ঘাসিগ্রাম ইউনিয়ন এবং পুঠিয়া উপজেলার বেলপুকুরিয়া ইউনিয়নের প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে ২টি করে মোট ৩৬ টি শিক্ষা সহায়তা কেন্দ্রের মাধ্যমে প্রায় ৮০০ জন ছাত্র-ছাত্রীকে শিক্ষা সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্যসেবা ও পুষ্টি কার্যক্রম
গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়াতে এবং সঠিক চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সমৃদ্ধি কর্মসূচি বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে। স্বাস্থ্য পরিদর্শ্ক কর্তৃ্ক খানা পরিদর্শ্ন, স্ট্যাটিক ক্লিনিক, স্যাটেলাইট ক্লিনিক (এমবিবিএস ডাক্তার দ্বারা পরিচালিত), বিশেষ স্বাস্থ্য ক্যাম্প এবং চক্ষু ক্যাম্পের মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হচ্ছে। গর্ভবতী, প্রসূতি, পুষ্টিহীন শিশু এবং অতি দরিদ্র রোগীদের গুরুত্ব সহকারে চিকিৎসা ও পরামর্শ্ প্রদান করা হয়। ।
কৈশোর কার্যক্রম
রাজমাহী জেলার মোহনপুর, পুঠিয়া, গোদাগাড়ী ও বাগমারা উপজেলার প্রত্যেকটি ইউনিয়নে কিশোর- কিশোরী ক্লাব গঠনের মাধ্যমে কিশোর- কিশোরীদের মূল্যবোধ ও চেতনার বিকাশ, খাদ্য ও পুষ্ঠি সচেতনতা, প্রতিভা, আত্তোউন্নয়ন ও দক্ষতা উন্নয়ন করা্। প্রতি বছর প্রত্যেকটি ইউনিয়নে কিশোর-কিশোরীদের সামাজিক সচেতনতামূলক ওরিয়েন্টেশন, সফট স্কিল উন্নয়ন প্রশিক্ষণ ও নেতৃত্ব উন্নয়ন প্রশিক্ষন পরিচালনা করা হয়। তাছাড়া প্রতিটি উপজেলায় উপজেলা দিবস ও কৈশোর মেলা (স্বাস্থ্যসচেতনতামূলক) এবং বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।
উন্নয়নে যুব সমাজ কার্যক্রম
মোহনপুর উপজেলার ঘাসিগ্রাম ইউনিয়ন এবং পুঠিয়া উপজেলার বেলপুকুরিয়া ইউনিয়নে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ করে সামাজিক দায়বদ্ধতা ও নৈতিক মূল্যবোধসম্পন্ন দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ আত্তমর্যা্দাশীল যুব সমাজ গঠনের লক্ষ্যে যুব ক্লাব গঠন করা হয়। উক্ত ক্লাব গঠনের মাধ্যমে যুবদের কর্ম্সংস্থানের সুযোগ ও উদ্যোক্তা সৃষ্ঠির লক্ষ্যে যথোপযুক্ত বাস্তবমুখি শিক্ষা ও দক্ষতা বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণ, গবেষনা, তথ্য-প্রযুক্তি, উদ্যোগ উন্নয়ন, জলবায়ু ও পরিবেশ ব্যবস্থাপনাগত উন্নয়নের ব্যবস্থা করা।
প্রবীণ জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন কার্যক্রম
প্রবীণদের মর্যা্দাপূর্ন্, দারিদ্র্যমুক্ত, সুস্বাস্থ্য ও নিরাপদ সামাজিক জীবন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মোহনপু উপজেলার ঘাসিগ্রাম ইউনিয়নে ও পুঠিয়া উপজেলার বেলপুকুরিয়া ইউনিয়নে প্রবীণ ক্লাব গড়ে তোলা হয়।
ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম
সুস্থ ও মাদকমুক্ত সমাজ গড়তে সমৃদ্ধি কর্মসূচি বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। এই কার্যক্রম শিক্ষার্থী, কৈশোর, যুব ও প্রবীণদের মানসিক ও শারীরিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
শতভাগ স্যানিটেশন
১ম পর্যায়ে স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ নিশ্চিত করতে অতি দরিদ্র পরিবারগুলোর জন্য স্যানিটারি ল্যাট্রিন নির্মাণ করা হয়েছে। বাগমারা উপজেলার গণিপুর ইউনিয়নে ৫০০টি পরিবারকে, পুঠিয়া উপজেলার বান্বেশর ইউনিয়নে ৪০০টি এবং মোহনপুর উপজেলার জাহানাবাদ ইউনিয়নে ৩০০টি পরিবারকে স্যানিটারি ল্যাট্রিন প্রদান করা হয়েছে, যার মধ্যে সিরামিক প্যান, গ্যাস পাইপ, লাইন পাইপ, সিমেন্টের রিং এবং ঢেউটিন সরবরাহ করা হয়। এই কার্যক্রম গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
ভিক্ষুক পুনর্বাসন
ভিক্ষাবৃত্তি দারিদ্র্যের চরম রূপ। সমৃদ্ধি কর্মসূচি ভিক্ষুকদের মর্যাদাপূর্ণ জীবন প্রদানের লক্ষ্যে পুনর্বাসন কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। বাগমারা উপজেলার গণিপুর ইউনিয়নে ৮জন, পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর ইউনিয়নে ৮ জন এবং মোহনপুর উপজেলার জাহানাবাদ ইউনিয়নের ৬জন ভিক্ষুককে ১,০০,০০০ টাকার সম্পদ প্রদানের মাধ্যমে পুনর্বাসিত করা হয়েছে। এই ২২ জন এখন স্বাবলম্বী, সমাজে সম্মানের সাথে জীবনযাপন করছেন এবং কেউ কেউ এখন অন্য ভিক্ষুকদের সহায়তা করছেন।
আর্থিক সহায়তা ও ক্ষুদ্রঋণ
শতফুল বাংলাদেশের ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি দরিদ্র ও চাহিদাসম্পন্ন মানুষকে স্বল্প সুদে ঋণ প্রদান করে তাদের স্বাবলম্বী করে তুলছে। কৃষকরা চাষের জন্য, খামারিরা খামার পরিচালনার জন্য এবং ব্যবসায়ীরা ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য ঋণ গ্রহণ করছেন। সমৃদ্ধি কর্মসূচির আওতায় ২০২০ সাল পর্যন্ত ২৪৯,২৫,২০০ টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছে, যার ফলে সদস্যরা বিভিন্ন আয়বৃদ্ধিমূলক কার্যক্রমে লাভবান হয়েছেন। বর্তমানে ঋণস্থিতি ১৭৩,৩১,০১৯ টাকা। এই ঋণের মাধ্যমে সদস্যরা পান চাষ, সবজি চাষ, গবাদি পশু পালন, মাছ চাষ এবং হাঁস-মুরগি পালনের মতো কার্যক্রমে সফল হচ্ছেন।
সমৃদ্ধি বাড়ি
সমৃদ্ধি বাড়ি তৈরি কর্মসূচি গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জন্য একটি উদ্ভাবনী উদ্যোগ। বাগমারা উপজেলার গণিপুর ইউনিয়নে ৫০টি, পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর উইনিয়নে ৫০টি এবং মোহনপুর উপজেলার জাহানাবাদ ইউনিয়নে ৩০টি সমৃদ্ধি বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে যেখান থেকে সদস্যরা প্রতি মাসে ৬,০০০-৭,০০০ টাকা আয় করছেন। এই বাড়িগুলো দেখে অন্যান্য পরিবারও উদ্বুদ্ধ হয়ে নিজ উদ্যোগে সমৃদ্ধি বাড়ি তৈরি করছে।
ভার্মি কম্পোস্ট প্লান্ট
টেকসই কৃষি উন্নয়নের জন্য বাগমারা উপজেলার গণিপুর ইউনিয়নে,পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর উইনিয়নে, মোহনপুর উপজেলার জাহানাবাদ ইউনিয়নে কেঁচো সার (ভার্মি কম্পোস্ট) উৎপাদনে সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। ১ম পর্যায়ে তিন উপজেলায় ১৫০টি ভার্মি কম্পোস্ট প্লান্ট স্থাপন করা হয়েছে। কৃষকরা কেঁচো সারের সুফল পেয়ে এর উৎপাদন ও ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।
আয়বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণ ও যুব প্রশিক্ষণ
গ্রামীণ অর্থনীতি কৃষির উপর নির্ভরশীল। সমৃদ্ধি কর্মসূচি সদস্যদের জন্য পান চাষ, সবজি চাষ, গবাদি পশু পালন, মাছ চাষ এবং হাঁস-মুরগি পালনের মতো আয়বৃদ্ধিমূলক কার্যক্রমে প্রশিক্ষণ প্রদান করছে। এ পর্যন্ত ৮৩৮ জনকে এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে, যা তাদের আয় বৃদ্ধিতে সহায়ক হচ্ছে। ২০২৪-২০২৫ অর্থ্বছরে উন্নয়নে যুব সমাজ কার্য্ক্রমের আওতায় মোহনপুর ও পুঠিয়া উপজেলার ২০০জন যুবদের ‘সামাজিক স্বেচ্ছাসেবা, নেতৃত্ব ও সম্প্রীতি উন্নয়ন’ শীর্ষ্ক যুব প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়।
ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে স্বাবলম্বীতা
শতফুল বাংলাদেশের ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য একটি শক্তিশালী হাতিয়ার। এই ঋণের মাধ্যমে কৃষকরা উন্নত কৃষি পদ্ধতি গ্রহণ করছে, খামারিরা তাদের খামার সম্প্রসারণ করছে এবং ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসা বৃদ্ধি করছে। উদাহরণস্বরূপ, গণিপুর ইউনিয়নের একজন কৃষক পান চাষের জন্য ঋণ নিয়ে তার উৎপাদন দ্বিগুণ করেছেন। একইভাবে, একজন গবাদি পশু পালনকারী ঋণের মাধ্যমে আরও গরু কিনে তার আয় বৃদ্ধি করেছেন। এই ঋণ সহজ শর্তে প্রদান করা হয়, যা সদস্যদের জন্য ঝুঁকি কমায় এবং তাদের আর্থিক স্বাধীনতার পথে এগিয়ে নিয়ে যায়।
উপসংহার
শতফুল বাংলাদেশের সমৃদ্ধি কর্মসূচি গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে একটি মাইলফলক। ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে দরিদ্র মানুষকে স্বাবলম্বী করা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার মাধ্যমে তাদের জীবনকে সমৃদ্ধ করা এবং ভিক্ষুকদের মর্যাদাপূর্ণ জীবন প্রদানের মাধ্যমে এই কর্মসূচি সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনছে। আমরা বিশ্বাস করি, এই উদ্যোগগুলো অব্যাহত থাকলে একটি শোষণমুক্ত, ন্যায়সঙ্গত এবং টেকসই সমাজ গড়ে উঠবে, যেখানে প্রতিটি মানুষ তাদের সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে সমৃদ্ধ জীবন যাপন করতে পারবে।